নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রটি বর্ণনা কর । নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে কিভাবে বলের পরিমাপ পাওয়া যায় ।
অথবা,
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র হইতে প্রমান করো যে, F = ma
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র :-
কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক । প্রযুক্ত বল যে দিকে ক্রিয়া করে, বস্তুটির ভরবেগের পরিবর্তন সেই দিকে হয় ।
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে আমরা পাই –
- ভরবেগের ধারণা
- বলের পরিমাপ (F = ma)
- বলের একক
- বল পরিমাপের পদ্ধতি
ধরি, m ভরের বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বল = F
বস্তুটির প্রাথমিক বেগ = u
এখন বস্তুটি F বলের প্রভাবে A অবস্থানে প্রাথমিক বেগ u থেকে t সময় পরে B অবস্থানে অন্তিম বেগ হল v
সুতরাং,
বস্তুটির প্রাথমিক ভরবেগ = mu
=> ভরবেগের পরিবর্তন = ( mv – mu )
যেহেতু এই পরিবর্তন t সময় হয়, তাই ভরবেগ পরিবর্তনের হার
= ভরবেগের পরিবর্তন / সময়
= ( mv – mu ) / t
এখন, নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুসারে, ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক ।
এখানে F = প্রযুক্ত বলের মান । k ধ্রুবকটির মান বলের এককের উপর নির্ভর করে । যদি একক ভরের বস্তুর উপর একক বল ক্রিয়া করে তবে ত্বরণের মান একক হয় ।
সুতরাং, উপরের সমীকরণ থেকে বলা যায়, F = 1, যখন m = 1, a = 1,
=> 1 = k . 1 . 1
=> k = 1
এখন, উপরের সমীকরনে k = 1 বসিয়ে পাই,
F = 1 . m . a
=> F = ma (প্রমাণিত)
F = ma সমীকরণ থেকে নিন্মলিখিত বিষয়গুলি জানা যায় –
- প্রযুক্ত বলের অভিমুখ ও বস্তুর গতির অভিমুখ একই হলে বস্তুটির বেগ বেড়ে যায় ফলে ত্বরণের সৃষ্টি হয় । ত্বরণ = a = F / m
- যদি প্রযুক্ত বল F -এর অভিমুখ বস্তুটির গতির বিপরীতে হয় তাহলে বস্তুটির বেগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে, ফলে মন্দনের সৃষ্টি হবে । মন্দন = a = F / m (মান ঋণাত্মক)
- বল যতক্ষণ ধরে প্রযুক্ত হয় ততক্ষন বস্তুটির মধ্যে ত্বরনের সৃষ্টি হয় ।
- বলের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে ত্বরণের আর সৃষ্টি হয় না, ফলে বেগ আর বাড়ে না । বস্তুটি শেষ যে বেগ লাভ করেছিল সেই বেগ নিয়ে অর্থাৎ সমবেগে নিয়ে সরলরেখা ধরে চলতে থাকবে ।
- বলের অভিমুখই হল ত্বরণ বা মন্দনের অভিমুখ ।